লকডাউনে পথশিশুদের পাশে লুসিও ভাই

করোনার মহামারিতে পথশিশুদের পাশে লুসিও ভাই

রবিন নিহাল – জুলাই ৪, ২০২১, daynewsbd এর ওয়েব পাতাতে প্রকাশিত

নামঃ ব্রাদার লুসিও , শিশুরা লুচি ভাই বলে ডাকে । লুসিও ভাই পেশায় ছিলেন ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার। জন্মস্থান ইটালী। সৃষ্টিকর্তার নিকট মানুষের কল্যাণে নিজেকে সমর্পন করেছেন। মানুষের কল্যাণে তার সারাদিন ব্যয় হয়। বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত এবং অবহেলিত পথশিশুদের নিয়ে প্রায় ১৫ বছর ধরে কাজ করছেন। আমরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেতে উন্মুখ থাকি আর লুসিও ভাই সেই ইউরোপ ছেড়ে জীবনের রঙিন সময়গুলো তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন বস্তিতে এবং পথে পথে কাটিয়েছেন। তার প্রতিষ্ঠিত সংগঠনের নাম “পথশিশু সেবা সংগঠন”। এই কোভিড-১৯ এর চূড়ান্ত সময়ে অধিকাংশ মানুষ যখন গ্রামে ফিরে গেছে, মাত্র অল্প কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী লুসিও ভাইকে সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু কেউ থাকুক আর না থাকুক এক মিনিটের জন্য তিনি পিছপা হননি। এই বয়সেও সমস্ত ঝুঁকিকে তিনি পিছনে ফেলে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। লুসিও ভাই বলেনঃ ‘আমি চাই মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াক। গড়ে উঠুক সংহতিময় সমাজ। তবে মানুষ আল্লাহকে ভালোবেসে, সামাজিক দায়বদ্ধতা কিংবা বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে এসব কাজ করুক। লোকদেখানো আর খ্যাতি অর্জন যেন উদ্দেশ্য না হয়।’ পৃথিবীতে প্রতিদিন ক্রমাগত অন্যায়-অত্যাচার, অপরাধ, দুর্নীতি, নৈতিক অবক্ষয়, পুঁজিবাদ, লোভ, পদ-পদবীর মোহ, লোক দেখানো, ঘৃণা, হিংসা-বিদ্বেষ এবং স্বার্থপর মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি সমাজসেবা আর মানবসেবার নামে বহু প্রতারণা আর লুটপাটের গল্পও আমরা জানি। কিন্তু কঠিন এই সময়ে লুসিও ভাইয়ের মতো অনেকেই তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় মানুষের কল্যাণে। মানবসেবায় উৎসর্গ করেন নিজেকে। লুসিও ভাইয়ের সাথে শিশুদের প্রাণবন্ত সম্পর্ক এবং শিশুদের অকৃত্রিম হাসিই বলে দেয় এখানে কতোটা গভীর ভালোবাসা বিদ্যমান। কোন খাদ নেই এতে। বিখ্যাত একটা উক্তি মনে পড়ছে, “If you want to help others heal, love them without an agenda.” (যদি তুমি অন্যের আরোগ্য লাভে সহযোগিতা করতে চাও, তবে কোন স্বার্থ ছাড়াই তাদের ভালোবাসো।) পথশিশু সেবা সংগঠন নীতি-নৈতিকতা এবং আর্থিক স্বচ্ছতার ব্যাপারে কোন ছাড় দেয় না। এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা খুব বেশী নয়। কোভিড-১৯ এর কারণে আমাদের নিয়মিত স্বেচ্ছাসেবীর সংখ্যা আরো কমে গেছে। এমনকি স্বেচ্ছাসেবী সংকটের কারণে আমাদের দুটি স্পটের কার্যক্রম বন্ধ করতে হয়েছে। আড্ডা দিয়ে, অলসতা করে জীবনে কতো সময়ই তো আমরা ব্যয় করি। আমরা কি মাসে অন্তত ২ ঘন্টা সময় ব্যয় করতে পারি না? লুসিও ভাইকে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, সংগঠন কেন বিদেশী অনুদান গ্রহণ করেনা?উত্তরে তিনি বলেছেন-‘ কারণ আমরা পৃথিবীকে জানাতে চাই, বাংলাদেশের মানুষদের উদারতা আছে তারা পরস্পরকে সহযোগিতা করতে পারে। যে মানুষটা ইউরোপে জন্ম নিয়ে বাংলাদেশের উদারতা আর ভালোবাসা প্রকাশ করার জন্য জীবনের এতো সময় ব্যয় করেছেন এবং করছেন সেই মানুষটা যদি হেরে যায় তবে এই পরাজয় আমাদেরও। তাই আসুন দিনের শুরুটা করি ভালো কাজ দিয়ে৷ এই সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যুক্ত হয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন। যারা সরাসরি ফিল্ডে এসে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন না তারা পোস্ট শেয়ার করে অন্যদের এই কাজে এগিয়ে আসার সুযোগ করে দিন। পথশিশুদের সেবায় এগিয়ে আসতে যোগাযোগ করুন- ফেসবুক পেইজঃ https://www.facebook.com/pothoshishu.sheba ফোনঃ 01964-444441