প্রিয় বন্ধুরা !!! ………

ইটালিতে একটি প্রবাদ আছে “লোকমুখে উচ্চারিত বাণী ঈশ্বরের বাণী”।তাই হতে পারে এটি আমাদের কাজের ক্ষেত্রেও সত্যি।অনেকে আমাদের কাজ দেখে আপত্তি জানায় ও পরামর্শ দেয় কিভাবে করা উচিত।যেমন- গত গাবতলি ফিল্ডে শিশুদের সাথে আমাদেরকে পাটিতে বসে কাজ করতে দেখে একজন বলল “ওদের কষ্ট কইরা পড়ালেখা শিখাইয়া কোন লাভ নাই;ওরা শয়তান,শয়তান-ই থাকবো;ভালো আর হইব না”। কিংবা গত কারওয়ান বাজার ফিল্ডে শিশুদের সতর্কতামূলক কিছু কথা বলার সময় একজন সিএনজি চালক তা শুনে তার চারপাশে মানুষের ভিড় জমালেন যেন আমরা শিশুদের মিছিলের বা ককটেলের কথা না বলি।আবার এমন কি গত পহেলা নভেম্বর মৃত্যু পথযাত্রী এক শিশুকে (ইমন) sick-shelter এ নেয়া হলে ফাদার তাকে রাখলেন কিন্তু পরেরদিন শিশুটির মুমূর্ষু অবস্থা দেখে সেখান থেকে তাড়াতাড়ি সরিয়ে নিতে বললেন (কারণ নামহীন শিশুটি সেখানে মারা গেলে তার প্রতিষ্ঠানের দুর্নাম হবে!)। তাই তারা এবং এরকম আরও অনেকে আমাদের কাজ দেখে আপত্তি জানাচ্ছে এবং পরিবর্তন করতে পরামর্শ দিচ্ছে।আমাদের ৪ জন উপদেষ্টা, ৬ জন কাউন্সিলর, এডুকেশনাল এডভাইসার থাকলেও মনে করি সাধারণ মানুষের কথাও শুনতে হবে।কিন্তু এটা কি সত্যি? আমাদের নিজস্ব স্বপ্ন কি পরিবর্তন করতে হবে নাকি আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়া বন্ধ করতে হবে? এটা অবশ্যই প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবীর চেতনার উপর নির্ভর করে।আমি ব্যক্তিগতভাবে এই পথেই চলতে থাকবো এবং ঐ ইটালিয়ান প্রবাদ কখনও বিশ্বাস করবো না । কারণ আমি অনুভব করি এটা আমার মাঝে সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা,তাঁর পরিকল্পনা আমাকে পূর্ণ করতে হবে।

এজন্য রাস্তায় ময়লার মধ্যে নামি, সবচেয়ে অবহেলিতদের মাঝে, তাদের ঘা পরিস্কার করতে,তাদের মুখের কাদা মুছে দিতে যেন তাদের মধ্যে ঈশ্বরের সত্যিকার সৌন্দর্য আবার ফিরে আসে। শিশুদের ঘা পরিস্কার করতে করতে তাদের হৃদয়ে ভালবাসা জাগাতে ও তাদের মুখে হাসি ফোঁটাতে চেষ্টা করি। আরও অনুভব করি,পথশিশুরা আসলে আমাদের স্বার্থপর ও ক্ষত-বিক্ষত সমাজের ফসল। পথশিশুদের কষ্ট আমাদের ভালবাসতে শেখায় ও সেবা করার সুযোগ দেয়। তাদের শরীরের বেদনাদায়ক ও ময়লা ঘা আমাদের স্বার্থপরতা ও অন্ধত্ব দূর করে।

কি আরও কেউ আছো যে এই পথে চলতে থাকবে? কারণ এটা অবহেলিত শিশুদের মানবতা, স্নেহ ও নতুন জীবনের আলো দেখানোর পথ (আমাদের সংগঠনের লক্ষ্য)।
পথশিশুদের ভালবাসুন,আমাদের সঙ্গে থাকুন।
সবার জন্য শুভো কামনা ।

1462618_655681257785936_1032836838_o

লুসিও ভাই
পথশিশুসেবা সংগঠন.
২০/১১/২০১৩

Leave a Comment